স্বদেশ ডেস্ক: ছাত্রদলের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সভাপতি পদে মামুন খান ও সাধারণ সম্পাদক পদে জুয়েল হাওলাদারের মনোনয়ন যাচাই বাছাই কমিটি বৈধ বলে ঘোষণা করলেও আপলি কমিটি তা বতিল করেছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে আপিল কমিটির পক্ষে শামসুজ্জামান দুদু ও ড. আসাদুজ্জামান রিপন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ দুই প্রার্থীর প্রার্থীতা আপিল কমিটি অনুমোদন করেনি বিধায় তাদের প্রার্থিতা আর বহাল নেই। তবে কি কারণে তাদের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে তা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
যাচাই বাছাই কমিটির এক সদস্য বলেন, আপিল কমিটি তাদের কাজের পরিসীমার বাইরে গিয়ে কাজ করেছে। কারণ, যাচাই বাছাই কমিটি যাকে বৈধ বলেছে তাকে আপলি কমিটি অবৈধ বলতে পারেন না। আপিল কমিটির কাজ হচ্ছে যেসব প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে তারা যদি আপিল করেন তা খতিয়ে দেখা। যাদের প্রার্থীতা বাতিল হয়েছে তারা যদি যৌক্তিক তথ্য প্রমাণ দিতে পারেন, তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা তাহলে আপিল কমিটি তাদের প্রার্থীতা ফিরিয়ে দেবেন। তারপরও কোন যুক্তিতে কেন তারা মামুন ও জুয়েলের প্রার্থীতা বাতিল করেছে তার হয়তো ব্যাখ্যা দেবেন কমিটি।
সভাপতি পদ প্রার্থী মামুন খান ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জুয়েল হাওলাদার জানান, তারা ষড়যন্ত্রের স্বীকার। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ দেয়া হয়নি। তারা জানেনই না কী কারণে তাদের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে তাদের আবেদন, তিনি যেন তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ করে দেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া ৪৫ জনের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করে যাচাই বাছাই কমিটি। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১৫ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন ৩০ জন প্রার্থী।
এছাড়া শুক্রবার রাতে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলে প্রার্থিতার শর্ত পূরণে যাচাই-বাছাই কমিটি যাদের প্রার্থিতা বাতিল করেছিল, যার প্রেক্ষিতে প্রার্থিতা ফিরে পাবার জন্য আপিল কমিটির কাছে যারা আবেদন করেছিলেন, আপিল কমিটি শুক্রবার বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করেন।
সভাপতি পদে প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল, আল মেহেদী তালুকদার, আরাফাত বিল্লাহ খান, মো. আসাদুল আলম, মো. আজিম উদ্দিন মেরাজ, এস এ এম আমিরুল ইসলাম, জুয়েল মৃধা এবং ফজলুল হক নীরবের। যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক বাতিল ঘোষিত সাত জন সভাপতি প্রার্থীতা আপিল আবেদন চূড়ান্ত বিশ্লেষণে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি, তাই তাদের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে যারা যাচাই-বাছাই কমিটির সিদ্ধান্তে বিবেচিত হয়নি, তারা হলেন-সাদিকুর রহমান, কে এম সাখাওয়াত হোসাইন, সিরাজুল ইসলাম, মো. ইমদাদুল হক মজুমদার ও মোহাম্মদ জামিল হোসেন। কিন্তু আপিল কমিটির কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই ৫ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন।
এছাড়া মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সাধারণ সম্পাদকের পদে প্রার্থীতা যাচাই-বাছাই কমিটির সিদ্ধান্ত বহাল রেখে অনুমোদিত হয়নি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আপিল কমিটি প্রতিটি বিষয়ে সঠিক বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের আবেদন বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এছাড়া আজ প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল কিন্তু তা একদিন বাড়িয়ে আগামীকাল ১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে ২ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারবেন ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত। ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটে অংশ নেবেন সংগঠনটির সারাদেশের ১১৭টি ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর।